বাংলাদেশের উত্তর জনপদের অন্যতম শিক্ষায়তন-"রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট" । অবিভক্ত বাংলার প্রাচীন শহর রংপুর । এ অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে বৃটিশ ভারতে নানামুখি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কারিগরি শিক্ষা প্রদানে আজকের রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর পদযাত্রা শুরু হয় ১৮৮২ সালে। ১৮৮২ সালে অবিভক্ত বাংলার অন্যতম কারিগরি বিদ্যাপীঠ হিসেবে "রংপুর বেইলী গোবিন্দলাল টেকনিক্যাল স্কুল" নামে শুরু হয় পথ চলা। তাজহাট জমিদার গোবিন্দলাল (জমিদারী কাল ১৮৭৯-১৮৯৭) এর পৃষ্ঠপোষকতায়-এ টেকনিক্যাল স্কুলটী প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯০৯-১০ সালের শিক্ষা জরিপের তথ্য মতে এ প্রতিষ্ঠানটিই ছিল এ অঞ্চলের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাদানের একমাত্র স্কুল। এ স্কুলটি শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ অনুমোদিত ছিল। রংপুর জেলা বোর্ডের তত্তাবধানে পরিচালিত হত। কালের পথ পরিক্রমায় প্রায় শত বর্ষ পর ১৯৬২ সালে এর নামকরণ হয় "রংপুর টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট"। আরও পরে ১৯৬৮ সালে রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি রংপুর শহরের জুম্মাপাড়ায় অবস্থিত। বিপরীতে বিভাগীয় কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপর অবস্থিত। এই বিশালাকার ভূমির উপর সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত শিক্ষায়তনটি-উত্তরাঞ্চলের কারিগরি শিক্ষাঙ্গনে তথা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠের মর্যাদা লাভ করতে চলেছে। রংপুর পলিটেকনিককে বাংলাদেশের সফলতম পলিটেকনিকের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে তৈরি করা হয়েছে 'রুপকল্প-২০১৮'।
মূল ক্যাম্পাসে রয়েছে তিন তলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমি ভবন, অফিস, লাইব্রেরী, আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ওয়ার্কশপ ভবন, জিমনেশিয়াম ও ল্যাবরেটরী এবং একটি ৫০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অডিটোরিয়াম। মূল ক্যাম্পাসে রয়েছে মসজিদ ও শহীদ মিনার।
রংপুর পলিটেকনিকের দুইটি বৃহৎ খেলার মাঠ রয়েছে; যার একটি কলেজের ভিতরে, অপরটি কলেজের বাইরে তিস্তা ছাত্রাবাসের সামনে। ছাত্রদের জন্য রয়েছে দুইটি (তিস্তা ছাত্রাবাস ও শাহজাহান কবির ছাত্রাবাস) এবং মেয়েদের জন্য একটি আবাসিক হল (তাপসী রাবেয়া ছাত্রীনিবাস)। শাহজাহান কবির ছাত্রাবাসে মেধাক্রম অনুযায়ী ছাত্রদের চান্স দেওয়া হয়।